ইসরায়েলের গণহত্যার বিচার চেয়ে আন্তর্জাতিক আদালতের প্রতি আহ্বান
বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা : রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিত ‘মার্চ ফর গাজা’ সমাবেশ থেকে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ এনে আন্তর্জাতিক আদালতে বিচার নিশ্চিত করার দাবি জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে যুদ্ধবিরতির পরিবর্তে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ এবং ১৯৬৭ সালের আগের সীমান্তে ফিলিস্তিন ভূখণ্ড ফিরিয়ে দিতে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
‘প্যালেস্টাইন সলিডারিটি মুভমেন্ট, বাংলাদেশ’ ব্যানারে আয়োজিত এই কর্মসূচিতে সর্বস্তরের জনগণের পক্ষে ঘোষণাপত্র পাঠ করেন আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান।
তিনি বলেন, “এই পদযাত্রা ইতিহাসে আমাদের সামনে এগিয়ে যাওয়ার এক ঐক্যবদ্ধ শপথ। গাজার জনগণের পাশে দাঁড়ানো এখন মানবতার পাশাপাশি ঈমানের দাবিও।”
ঘোষণাপত্রে চারটি পর্যায়ে দাবি উপস্থাপন করা হয়— আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, মুসলিম উম্মাহ, বাংলাদেশ সরকার এবং সাধারণ জনগণের প্রতি। মূল দাবিসমূহের মধ্যে রয়েছে:
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি দাবি:
-
ইসরায়েলের গণহত্যার বিচার আন্তর্জাতিক আদালতে নিশ্চিত করা।
-
যুদ্ধবিরতি নয়, বরং গণহত্যা বন্ধে কার্যকর ও সম্মিলিত পদক্ষেপ নেওয়া।
-
পূর্ব জেরুজালেমকে ফিলিস্তিনের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান।
-
১৯৬৭ সালের আগের ফিলিস্তিন ভূখণ্ড ফিরিয়ে দেওয়া।
-
ফিলিস্তিনিদের রাষ্ট্রীয় স্বায়ত্তশাসন ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠা।
মুসলিম বিশ্ব ও ওআইসির প্রতি:
-
ইসরায়েলের সঙ্গে সব ধরনের সম্পর্ক (অর্থনৈতিক, সামরিক, কূটনৈতিক) ছিন্ন করা।
-
বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ।
-
গাজার জনগণের জন্য সর্বাত্মক মানবিক সহায়তা।
-
ভারত সরকারের হিন্দুত্ববাদী নীতির বিরুদ্ধে কার্যকর অবস্থান নেওয়া।
বাংলাদেশ সরকারের প্রতি:
-
ইসরায়েলকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি না দেওয়ার বিষয়ে অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করা।
-
ইসরায়েলের সঙ্গে বিদ্যমান চুক্তি বাতিল করা।
-
গাজায় রাষ্ট্রীয়ভাবে ত্রাণ পাঠানো এবং জায়নবাদী পণ্যের বর্জন নিশ্চিত করা।
-
শিক্ষানীতিতে ফিলিস্তিন ও মুসলিম ইতিহাস অন্তর্ভুক্ত করা।
সাধারণ জনগণের প্রতি আহ্বান:
-
ইসরায়েলপন্থী পণ্য ও কোম্পানিগুলোর বয়কট।
-
ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে মুসলিম উম্মাহর চেতনায় গড়ে তোলা।
-
বিভক্ত না হয়ে ঐক্যবদ্ধ থাকার অঙ্গীকার।
সমাবেশের শেষে মাহমুদুর রহমান বলেন, “গাজার শহীদরা কেবল আমাদের দোয়া নয়, প্রস্তুতিও কামনা করেন। যারা প্রতিরোধের আগুন জ্বেলে বিশ্বকে সাহস ও ইমানের নতুন সংজ্ঞা দিয়েছে, তাদের প্রতি রইল আমাদের সালাম।”
ঘোষণাপত্রে গাজার জনগণকে অভিনন্দন জানিয়ে বলা হয়, “আপনারা ইমান, সবর ও কুরবানির মহাকাব্য রচনা করেছেন। বাংলাদেশের মানুষ আপনাদের সাহসিকতায় সম্মান জানায় এবং ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের অঙ্গীকার করে।”