১২ সাংবাদিকের ব্যাংক হিসাব তলব
নিজস্ব প্রতিবেদক । নিউজনেক্সটবিডি.কম
১২ সাংবাদিকের ব্যাংক হিসাব তলব করেছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। একইসঙ্গে তাদের ব্যক্তি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবের তথ্য দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা পাঠিয়েছে সংস্থাটি।
সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) বিএফআইইউর সংশ্লিষ্ট এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
হিসাব তলব করা সাংবাদিকরা হলেন— সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক সুভাষ চন্দ্র বাদল, ঢাকা টাইমসের সম্পাদক আরিফুর রহমান দোলন, বাংলাদেশ পোস্টের বিশেষ প্রতিনিধি নুরুল ইসলাম হাসিব, নাগরিক টিভির প্রধান বার্তা সম্পাদক দ্বীপ আজাদ, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা বাসসের সাবেক প্রধান বার্তা সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, উপ-প্রদান বার্তা সম্পাদক মো. ওমর ফারুক, প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের সাবেক মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদ, চ্যানেল আইয়ের বিশেষ প্রতিনিধি হোসনে আরা মমতা ইসলাম সোমা, দৈনিক জনকণ্ঠের ডেপুটি এডিটর ওবাইদুল কবীর মোল্লা, দৈনিক জাগরণের সম্পাদক আবেদ খান, ফ্রিল্যান্সার সাংবাদিক অজয় দাস গুপ্ত এবং গ্লোবাল টিভির প্রধান সম্পাদক সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা।
বিএফআইইউর নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, হিসাব তলব করা ব্যক্তিদের সংশ্লিষ্ট তথ্য বা দলিল যেমন হিসাব খোলার ফরম, কেওয়াইসি ও লেনদেন বিবরণী ইত্যাদি চিঠি দেওয়ার তারিখ থেকে ২ কার্যদিবসের মধ্যে বিএফআইইউতে পাঠানোর জন্য ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে বলা হয়েছে।
ছাত্র-জনতার অবিস্মরণীয় অভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। এর মাধ্যমে টানা ১৬ বছরের আওয়ামী লীগের নজিরবিহীন দুঃশাসন ও স্বেচ্ছাচারিতার অবসান ঘটে। এরপর নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আসার পর আওয়ামী লীগ সরকারের অপকর্মের সহযোগী ও নানা অনিয়ম-দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত এমন সন্দেহে বেশকিছু পেশাজীবীদের ব্যাংক হিসাব তলব ও জব্দ করে বিএফআইইউর।
তলব ও জব্দ করা হিসাবগুলোতে সন্দেহজনক বা অস্বাভাবিক লেনদেন কিংবা অর্থপাচার বা অনিয়মের কোনো প্রমাণ মিললে এসব হিসাবের তথ্য দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে তদন্ত করতে দিয়ে থাকে বিএফআইইউ।
আর আগে চলতি বছর ৩০ অক্টোবর ২৮ সাংবাদিকের ব্যাংক হিসাবের তথ্য চেয়েছে বিএফআইইউ, তাদের বিষয়ে তথ্য চেয়ে বিএফআইইউ দেশের বিভিন্ন ব্যাংকে চিঠি পাঠিয়েছিল। তাদের নামে কোনোও ব্যাংক লকার, সেভিংস কার্ড, ক্রেডিট কার্ড এবং অন্যান্য আর্থিক লেনদেনসংক্রান্ত দলিলপত্র রয়েছে কি না বা অর্থের লেনদেন হয়েছে কি না-সেই তথ্য সংক্রান্ত নির্দেশনা পাঠিয়েছে সংস্থাটি।
যাদের তথ্য চাওয়া হয়েছিল তারা হলেন- বাংলাদেশ প্রতিদিনের সম্পাদক নঈম নিজাম, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন, ডিবিসি নিউজের সম্পাদক জায়েদুল হাসান পিন্টু, এবিনিউজ২৪ডটকমের এডিটর ইন চিফ সুভাষ সিং রায়, কালের কণ্ঠের নির্বাহী সম্পাদক হায়দার আলী, এটিএনের জ. ই. মামুন, বাংলা ইনসাইডারের সম্পাদক সৈয়দ বোরহান কবীর, নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনের প্রেস মিনিস্টার শাবান মাহমুদ, বাংলাদেশ প্রতিদিনের সিটি এডিটর মির্জা মেহেদী তমাল ও চিফ রিপোর্টার জুলকারনাইন রনো, সমকালের সম্পাদক আলমগীর হোসেন, বাসসের মধুসূদন মন্ডল, ডিবিসির মাসুদ আইয়ুব কার্জন, আমাদের সময়ের নির্বাহী সম্পাদক মাইনুল ইসলাম, সাংবাদিক ফরাজী আজমল হোসেন, বৈশাখী টেলিভিশনের অশোক চৌধুরী, নির্বাহী সম্পাদক রাহুল রাহা, ডেইলি সানের সম্পাদক রেজাউল করিম লোটাস।
তালিকায় আরও রয়েছেন-নিউজ টোয়েন্টিফোরের ডেপুটি চিফ নিউজ এডিটর আশিকুর রহমান শ্রাবণ, যুগান্তরের বিশেষ প্রতিনিধি আব্দুল্লাহ আল মামুন, স্বদেশ প্রতিদিনের সাবেক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম রতন, দৈনিক মুখপাত্রের সম্পাদক শেখ জামাল হোসেন, ডিবিসি নিউজের বিশেষ প্রতিনিধি আদিত্য আরাফাত, এটিএন নিউজের বিশেষ প্রতিনিধি তৌহিদুল ইসলাম সৌরভ, যুগান্তরের বিশেষ প্রতিনিধি শেখ মামুনুর রশীদ, সাংবাদিক শ্যামল সরকার, ইত্তেফাকের নগর সম্পাদক আবুল খায়ের এবং দৈনিক কালবেলার সম্পাদক ও প্রশাসক সন্তোষ শর্মা।