বীর মুক্তিযোদ্ধাকে জুতার মালা, প্রধান উপদেষ্টার নিন্দা
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ফাইল ছবি
নিজস্ব প্রতিবেদক । নিউজনেক্সটবিডি.কম
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাইকে গলায় জুতার মালা পরিয়ে হেনস্তা করার ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) সকালে এক বিবৃতিতে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।
বিবৃতিতে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, চৌদ্দগ্রামে মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাইকে মানহানির ঘটনায় আমরা তীব্র নিন্দা জানাই।
এতে বলা হয়, পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসনকে ঘটনার তদন্ত করে দোষীদের আইনের আওতায় আনার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, স্থানীয় পুলিশ জানিয়েছে, আব্দুল হাই হত্যাসহ ৯টি মামলার আসামি। এতে ড. ইউনূস আরও বলেন, আমরা সবাইকে আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানাচ্ছি।
রোববার দুপুরে বাড়ির পাশের গ্রামে ৭৮ বছর বয়সী কানুকে একা পেয়ে স্থানীয় অন্তত ১০ থেকে ১২ ব্যক্তি তাকে তার গলায় জুতার মালা পরিয়ে দেয়। তাদেরই একজন ঘটনার ভিডিও করে, যেটি ছড়িয়েছে ফেইসবুকে।
এতে দেখা যায়, মুক্তিযোদ্ধার কানুর হাত টেনে সামনে নিয়ে যাচ্ছেন দুই ব্যক্তি। এসময় তার গলায় রশি দিয়ে বাধা কয়েকটি জুতা দেখা যায়। তার আশপাশে ঘিরে ছিল আরো জনা পনের লোক। একপর্যায়ে কানু জুতার মালা সরিয়ে এলাকায় থাকার আকুতি জানালেও তাকে এলাকা ছাড়ার হুমকি দিতে থাকেন ঘিরে থাকা লোকজন।
ওই ব্যক্তিদের একজনকে বলতে শোনা যায়– “এক গ্রাম লোকের সামনে মাফ চাইতে পারবেন কিনা?” তখন কানুকে দুই হাত উপরে তুলে মাফ চাইতে দেখা যায়। ঘটনার পর অসুস্থ অবস্থায় ওই মুক্তিযোদ্ধাকে ফেনীর একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
স্থানীয়রা বলছেন, মুক্তিযোদ্ধা কানু কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য। আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি মুজিবুল হকের রোষানলে পড়ে বিগত ৮ বছর এলাকায় যেতে পারেননি। বাড়িঘরে হামলা করাসহ একাধিক মামলা দেওয়া হয় ওই বীর মুক্তিযোদ্ধার নামে।
উল্লেখ্য, কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে আবদুল হাই কানু (বীর প্রতীক) নামে খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধার গলায় জুতার মালা দিয়ে লাঞ্ছিত করেছেন স্থানীয় লোকজন। রোববার (২২ ডিসেম্বর) সকালে চৌদ্দগ্রামের নিজ এলাকা কুলিয়ারা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে। চৌদ্দগ্রাম থানার ওসি এটিএম আক্তারুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে, যার নেতৃত্বে এমন ঘটনা ঘটেছে তার পরিচয় নিশ্চিত করেছে বাংলা অ্যাফেয়ার্স। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, এমন হীন কাজে জামায়াত সমর্থক প্রবাসী আবুল হাসেমের নেতৃত্বে অহিদ, রাসেল, পলাশসহ ১০ থেকে ১২ জন ব্যক্তি অংশ নিয়েছিলেন।